দেশজুড়ে

আরো দুই মেট্রোরেল চুক্তি হবে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ  মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তুতিমূলক সম্ভাব্যতা যাচাই (প্রিপারেটরি ফিজিবিলিটি স্টাডি) কাজ শুরু হয়েছে। ‘মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫ ও লাইন-৩ শীর্ষক মূল প্রকল্পের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বিস্তারিত কার্যসূচি প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে।

২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এমআরটি-১ এয়ারপোর্ট-খিলক্ষেত-বারিধারা-বাড্ডা-রামপুরা-মৌচাক হয়ে কমলাপুরে মিলিত হবে। খিলক্ষেত-পূর্বাচল কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত লুপ লাইনও থাকবে এ রুটে। অন্যদিকে ১৩ কিলোমিটারের এমআরটি-৫ বিস্তৃত হবে গাবতলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর-১, ১০ ও ১৪ এবং বনানী-গুলশান-২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত।

সাধারণত যেকোনো প্রকল্প গ্রহণের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়। তবে ঝুঁকিমুক্ত মেট্রোরেল নির্মাণে এর আগে প্রিপারেটরি ফিজিবিলিটি স্টাডিও করে নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা মেট্রো প্রজেক্ট প্রিপারেটরি টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট (ডিএমপিপিটিএ) প্রকল্পের আওতায় এ কাজ চলমান।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় প্রকল্প পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নে আশার আলো দেখছে ঢাকাবাসী। প্রকল্পের ঋণচুক্তি জাপানে অনুষ্ঠিত হবে। দুটি প্রকল্পে ১০৪ দশমিক ৩৭ কোটি ডলার দেবে দেশটি।

অন্যদিকে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প-১ ও মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ারড পাওয়ার প্রজেক্ট-৫ প্রকল্পের ঋণচুক্তি জাপানে হবে না। প্রকল্প দুটির আওতায় ৮৪ কোটি ডলার ঋণ দেবে দেশটি। এ ঋণচুক্তি বাংলাদেশেই অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, জাপান কিছু নিয়মনীতি অনুসরণ করেই ঋণ দিয়ে থাকে। রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঋণচুক্তি জাপানে অনুষ্ঠিত না হয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের ছয়টি বড় উন্নয়ন প্রকল্পে ২৪১ কোটি ইউএস ডলার দেবে। প্রতি ডলার সমান ৮৩ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার ৩ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা দেবে জাপান। বাংলাদেশের সঙ্গে ৪০তম সরকারি উন্নয়ন সহযোগিতার (অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স-ওডিএ) আওতায় জাপান এ অর্থ সহায়তা দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন জাপান সফরে এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হবে।

জাপানি ঋণচুক্তি প্রসঙ্গে ইআরডি’র এক ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, জাপানে দুটি মেট্রোরেল ও যমুনায় পৃথক রেল সেতুসহ মোট ছয়টি প্রকল্পের ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের জনগণের জন্য প্রকল্পগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ সংক্রান্ত প্রকল্পের ঋণচুক্তি প্রধানমন্ত্রীর সফরে হবে না। অন্য কোনো সময় প্রকল্প দুটির ঋণচুক্তি সম্পাদিত হবে।

বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুকে রক্ষা করতেই এবার এর পাশে আলাদাভাবে ডুয়েলগেজ রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। সড়কের পাশাপাশি সেতুতে রেল সংযোগও রয়েছে। তবে এই রেল সংযোগ বর্তমানে না থাকার সমতুল্য। সেতুতে কচ্ছপ গতিতে চলে ট্রেন। ইচ্ছে করলে কোনো যাত্রী দৌঁড়ে ট্রেনের আগেই সেতু পার হতে পারবেন। কারণ এর আগে কয়েকবার সেতুতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। কারণ ট্রেন আউটার সিগনালিং খাঁচা ভেঙে ফেলেছে দুষ্কৃতিকারীরা।

প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠান জাইকা ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা দেবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। সম্পূর্ণ স্টিল দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের ঋণচুক্তিও অনুষ্ঠিত হবে। হেলথ সার্ভিস স্ট্রেংদেনিং প্রকল্পের আওতায় জাপানে ৮ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ ও জাইকা প্রতিনিধি ঋণচুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। ঋণে সুদহার ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ১০ বছরের গ্রেস প্রিরিয়ডসহ ৩০ বছরে বাংলাদেশকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close