আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর ইলিম হত্যাকান্ডে আরও একজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: আশুলিয়ার ডিস ব্যবসায়ী ইলিম সরকারের (৪২) চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে জড়িত আরো এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে এই হত্যাকান্ডে জড়িত ইলিম সরকারের স্ত্রী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন (পিবিআই)।

বৃহস্পতিবার(২৮ অক্টোবর) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন  ঢাকা জেলা পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক(এসআই) সালেহ ইমরান। বুধবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ (৩১) আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ইয়ারপুর গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে। তিনি হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামির বন্ধু। এ নিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৩ জনকে গ্রেফতার করা হলো।

পিবিআই এর তথ্য মতে, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার তেলটুপি গ্রামের আঃ সামাদের ছেলে মোঃ রবিউল করিম পিন্টু(৩৫) আশুলিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে লাইন ম্যান হিসেবে চাকরী করতেন। চাকরীর সুবাদে ইলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুৎ এর মিটার লাগানোর কাজ করতে গিয়ে তার স্ত্রী কেমিলির সাথে ২০১৯ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে পিন্টুর। এদিকে সাইফুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ একজন পল্লীবিদ্যুতের ঠিকাদার ব্যবসায়ী। কাজের সুবাদে পিন্টু ও ইউসুফের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বন্ধু পিন্টুর কথায় তাকে সহায়তা করতেই হত্যাকান্ডে অংশ নেয় ইউসুফ। শুধুমাত্র বন্ধুত্ব রক্ষা করতেই বন্ধুর কাজে সহায়তা করেন ইউসুফ।

পিবিআই আরও জানায়, পরকীয়ার বিষয়টি স্ত্রী কেমিলির স্বামী টের পেয়ে গেলে স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ডেকে তা প্রকাশ করে দিবেন বলে জানান। এই ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। পরকীয়া বিষয়টি যাতে অন্য কেউ জানতে না পারে তার জন্য ঘটনার এক সপ্তাহ আগে কেমিলি এবং তার পরকীয়া প্রেমিক পিন্টু মিলে ইলিম সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরকীয়া প্রেমিক পিন্টু ইলিম সরকারের বাসায় দুজন ভাড়াটিয়া খুনি বাসা ভাড়া করে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। তারা কাজটি সফল না করতে পারায় পিন্টু নিজেই হত্যাকান্ড করার পরিকল্পনা করে৷ সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন ২৮ মার্চ সকাল ৯ টার দিকে কেমিলির পরামর্শে পিন্টু তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেমিলি রাতের বেলা দই এর সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ইলিম সরকার কে খাইয়ে দেয়। ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ইলিম সরকার নিস্তেজ হয়ে গেলে সকাল বেলা পিন্টু তার বন্ধু ইউসুফকে নিয়ে বাসায় এসে চাকু দিয়ে কুপিয়ে ইলিম সরকারকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে ইলিম সরকারের বাসার সিসিটিভি ফুটেজ এর ডিভিআর মেশিন খুলে নিয়ে যায় তারা।

ইলিম সরকার এর গলার নিচে ১ টি, পেটে ১১ টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের ১ টি রক্তাক্ত জখমের দাগ দেখতে পাওয়া যায়। বন্ধুকে সহায়ত করতে গিয়েই এমন ভয়ানক কিলিং মিশনে অংশ নেন ইউসুফ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী সাইফুল ইসলামকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে গত ২১ জুলাই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন। এর আগে (২৫ আগস্ট) গ্রেফতারকৃত আসামি পিন্টু এবং ক্যামিলি হত্যাকাণ্ডে তাদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ক্যামিলির স্ত্রী ডিস ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র করে উক্ত ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রচার করতে থাকে। এমনকি স্বামীর হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close