আশুলিয়াপ্রধান শিরোনামস্থানীয় সংবাদ

আশুলিয়ায় ঝুট নিয়ে সংঘাতের ঘটনায় আরও ২ মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে আশুলিয়ার ভাদাইলে সংঘর্ষের ঘটনায় দু গ্রুপের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলা দায়ের করেন ইউপি সদস্য সাদেক ভুইয়ার ছেলে মনির হোসেনের সমর্থক ও বাকি দুটি স্থানীয় যুবলীগ নেতা কবির সরকারের ম্যানেজার সেলিম ও ব্যবসায়ী আবু তাহের।

বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) বিকেলে এ তথ্য  নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম। এর আগে বুধবার (০৩ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার ফারুক হোসেনের ছেলে মোঃ কবির হোসেন(৩৪) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

আসামীরা হলেন, আশুলিয়া থানার গোরাট গ্রামের হাকিম সরকারের ছেলে মোঃ মাহু সরকার(২৮), ইয়ারপুর গ্রামের মজিবর মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা(৩০), নওগাঁ সদর থানার দাসকান্দি গ্রামের কাফলক আমিনের ছেলে বর্তমান জামগড়া নিবাসী মোঃ সেলিম হোসেন(২৯), আশুলিয়ার ইয়ারপুর গ্রামের হাবি দেওয়ানের ছেলে মোঃ কামরুল দেওয়ান(৩০), ইয়ারপুরের কামাল গাজীর ছেলে মোঃ পারভেজ(৩২), গোরাট গ্রামের মৃত হাবিবুল্লাহর ছেলে মোঃ নুরুল আমিন সরকার(৩৫), একই গ্রামের সিরাজের ছেলে আবু বক্কর(৩৫), শাহীন(২৫), রবিন(২৫), আব্দুল্লাহ(২৪), আশুলিয়ার গাজিরচট এলাকার শরীফ(২৮), একই এলাকার শুভ(৩২), হালিম(৩২), গাজীপুর জেলার কাশিমপুর থানার বাগবাড়ী গ্রামের ফরহাদ(৩০), এবং একই এলাকার রাজু(২৮)। এছাড়া আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, অভিযুক্তরাসহ আরও ২০-২৫ জন লাঠি-সোটা, ছোরা, ছ্যান, রামদা সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোটরসাইকেল ও পিকআপ যোগে সাদেক ভূইয়া মেম্বারের বাড়ির সামনে আসে। সেসময় বাড়িঘর ভাংচুর করে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিসাধন করে এবং কয়েকজনকে মারধর করে আহত করে প্রাণ্নাশের হুমকি দেয়। এলাকাবাসী জড়ো হলে পিকআপ ও মোটরসাইকেল ফেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।


এরপর একই দিন রাত ৮টায় আশুলিয়া থানায় ভাদাইলের ইউপি সদস্য সাদেক ভূইয়ার ছেলে মনির হোসেন ভূঁইয়াকে ১ নম্বর আসামী করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন আশুলিয়ার উত্তর গাজিরচট এলাকার মৃত বুদ্দু মৃধার ছেলে আবু তাহের(৩৪)।

আসামী করা হয়, সাদেক ভূইয়ার অপর ছেলে দেলোয়ার হোসেন (৩৮), অহেদ আলীর ছেলে সুজন মিয়া, জব্বার মুন্সীর ছেলে আবুল কালাম ওরফে গ্যাস কালাম(৩৫), কামাল মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া(২৬), আব্দুর রব প্রধানের ছেলে সেলিম প্রধান(৪৫)। এরা সকলেই আশুলিয়ার ভাদাইল নিবাসী। শ্রীপুর তালপট্টির আহসান আলীর ছেলে আনিসুর রহমান আনিস(৩২), ভাদাইলের বশির উদ্দিনের ছেলে বাবুল(৪৫), ভাদাইলের হাবী হোসেনের ছেলে কবির হোসেন(৩৯), সাদেক ভুইয়ার ম্যানেজার মানিক(৩৭), একাব্বর আলীর ছেলে আশরাফুল(২৮), মফিজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ(৩৮), সাইফুল আলম(৪৫) এবং সুজন(৩০)। এছাড়া আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতভাবে অভিযুক্ত করা হয়।

আবু তাহের তার এজাহার নামায় উল্লেখ করেন, কারিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং আশুলিয়া থানার যুবলীগের আহবায়ক কবির হোসেন সরকার ডিইপিজেডের এক্সপেরিয়েন্স ক্লথিং কোম্পানী লিমিটেড এবং এক্সপেরিয়েন্স এক্সেসোরিজ কোম্পানীর ওয়েস্টেজ প্রোডাক্ট(ঝুট) ফার্স্ট পার্টি হিসেবে কিনে নেন। সেই কারিমা এন্টারপ্রাইজ থেকে সেকেন্ড পার্টি হিসেবে উক্ত কারখানার মাল কিনে নিত আবু তাহের। অভিযুক্তরা আবু তাহেরের কাছে এককালীন ২৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করতে না দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। গত সোমবার (১ মার্চ) অভিযুক্তরা ইপিজেডে ঐ কারখানা থেকে আবু তাহেরের কর্মীদের বের করে দেয় এবং ইপিজেডের গেইটে ওভারব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় কর্মীদের উপর হামলা করে। এরপর মনির হোসেন ভূঁইয়া তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং চাঁদা না দিলে কারখানা থেকে মাল নামাতে বাঁধা দেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত মঙ্গলবার (২ মার্চ) যুবলীগের কর্মী সমর্থকরা ওই এলাকায় গেলে মনির হোসেন ভূঁইয়া প্রায় ২০ টি মোটরসাইকেল ভাঙ্গচুর করেন । এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে মাইকিং করে যুবলীগের কর্মীদের উপরও হামলা করেন তিনি। এ ঘটনায় যুবলীগের প্রায় ১০ জন আহত হয়। ঘটনার রাতে যুবলীগ নেতা কবির হোসেন সরকারের ম্যানেজার সেলিম বাদী হয়ে মনির হোসেনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। এ মামলায় গ্রেফতার হয় ইউপি সদস্য সাদেক হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে মনির হোসেন ভূঁইয়া। পরে ব্যবসায়ী আবু তাহের মনির হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও প্রাণনাশের হুমকিসহ একাধিক অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন।

আরএম/ঢাকা অর্থনীতি

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close