দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

এএসপি হত্যাঃ মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক রিমান্ডে

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ফাতেমা খাতুনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম সাইদুজ্জামান শরীফের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ৪৫ বছর বয়সী ফাতেমা তুজ জোহরা ময়নাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি ফাতেমা খাতুন অসুস্থ হয় বলে জানান। একই সঙ্গে ফাতেমা খাতুনকে আদালতে হাজির করতে হাজতি পরোয়ানা ইস্যুর আবেদন করেন। এরপর বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি চিকিৎসা শেষে সুস্থতা সাপেক্ষে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দেন।

গত ৯ নভেম্বর রাজধানীর মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিম। এরপরই আনিসুলকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিউটিটে নেয়া হচ্ছে বলে তার পরিবারকে জানানো হয়। পরে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনিস্টিউটিটে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার পরদিন আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল বলেন, আনিস কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে তাকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কাউন্টারে যখন ভর্তির ফরম পূরণ করছিলেন, তখন কয়েকজন কর্মচারী দোতলায় নেন। কিছুক্ষণ পর আনিসুল অজ্ঞান হওয়ার খবর পান। সেখান থেকে তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিউটিটে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরো বলেন, পরে আদাবর থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতাল থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে দেখা যায়, দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে পুলিশ কর্মকর্তা আনিসুল করিমকে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। সেখানে হাসপাতালের ছয় কর্মচারী মিলে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর নীল পোশাক পরা আরো দুজন কর্মচারী পা চেপে ধরেন। তার মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারী হাতের কনুই দিয়ে আনিসকে আঘাত করে। এ সময় হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ পাশে দাঁড়ানো ছিলেন। পরে একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পিছমোড়া করে বাঁধা হয়। কয়েক মিনিট পর আনিস জ্ঞান হারান।

এরপর কর্মচারীদের একজন আনিসকে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। কিছু সময় পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। কক্ষের দরজা লাগিয়ে আনিসের বুকে পাম্প করেন ওই নারী।

রেজাউল করিম বলেন, আনিসের ব্লাডপ্রেসার ও হৃদরোগ ছিল। কিন্তু এ দুটির কোনোটিই মারাত্মক ছিল না। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গণপিটুনিতে আমার ভাই মারা গেছে।

আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close