দেশজুড়ে

কবুতর চুরির অভিযোগে ২ স্কুলছাত্রকে নির্যাতন, ইউপি সদস্য গ্রেফতার

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ঝালকাঠির নলছিটিতে কবুতর চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মধ্যে এক শিশুর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (৯ জুন) উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চৌদ্দবুড়িয়া গ্রামে কবুতর চুরির অভিযোগে খলিলুর রহমানের ছেলে সজিব হোসেন খান (১৪) এবং আবদুল ক্দ্দুুস হাওলাদারের ছেলে রিফাত হোসেনকে (১৪) গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক জয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়।

নির্যাতনের শিকার দু’জনই স্থানীয় জেড এ ভূট্টো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। নির্যাতনের ঘটনার পর জয়ের বাবা সোমবার রাতে নলছিটি থানায় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ কনস্টেবল শাহ আলমসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে রাতেই ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, চৌদ্দবুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল অভিযোগ কেন্দ্রে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মো. শাহ আলমের বাড়িতে শনিবার রাতে কবুতর চুরি হয়। রোববার সকালে পার্শ্ববর্তী এলাকা তবিরকাঠি থেকে সজিব হোসেন খান ও রিফাত হোসেন জয়কে আটক করে শাহ আলম ও তার লোকেরা। পরে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বিচার বসিয়ে শাস্তির (নির্যাতন) নির্দেশ দেয়।

পরে জয় নামে শিশুর মাথার মাঝখান থেকে চুল কেটে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিচার ও নির্যাতনের ঘটনা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে তা ছড়িয়ে পরে।

নির্যাতনের শিকার জয় জানায়, রাত থেকে পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়। এ সময়ে কোনো কিছু খেতে না দিয়ে দফায় দফায় মরাধর করা হয়। পরে শালিশির কথা বলে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করে। পুলিশ শাহ আলম ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেয়।

জয়ের বাবা আবদুল কুদ্দুস বলেন, আমার ছেলের নামে কবুতর চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারধর করে চুল কেটে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। জরিমানার টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে এনেছি। তারা আমার ছেলের ন্যাড়া মাথার ছবি ফেসবুকে দিয়েছে। অনেকে ফোন করে ঘটনা জানতে চায়। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছি না। আমরা গরীব বলে কি এ অমানবিকতার বিচার হবে না?

এ বিষয়ে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলে দু’টি আমাদের গ্রামে এসে কবুতর চুরি করেছে। এর আগেও তারা কয়েকজনের বাসা থেকে কবুতর নিয়ে গেছে। আমি তাদের আটক করিনি, মারধরও করিনি। আমি ঘটনাটি শুনেছি মাত্র। এলাকার প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

নলছিটি থানার ওসি মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, নির্যাতনের শিকার জয়ের বাবা মামলা দায়ের করার পর ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close