দেশজুড়ে

‘পুরুষরা এখন বাথরুমে গিয়ে সিগারেট খান’

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ ‘পুরুষরা এখন ঘরে লুকিয়ে কিংবা বাথরুমে গিয়ে সিগারেট খান। এমনকি এস্ট্রেও তারা আড়ালে রাখেন। এটা আমাদের অনেক বড় অর্জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত হবে বাংলাদেশ।’

সোমবার (২৩ মে) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে উন্নয়ন সমন্বয়ের উদ্যোগে তামাকপণ্যে কার্যকর করারোপ বিষয়ক প্রাক-বাজেট আলোচনায় বারডেমের ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টাল সার্জারি বিভাগের উপদেষ্টা ডা. অরুপ রতন চৌধুরী এসব কথা বলেন।

নারীদের ক্ষেত্রে সিগারেট অনেক বেশি ক্ষতিকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে নারীদের স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্যাসিভ স্মোকিং অনেক বড় কারণ। মেয়েদের মধ্যেও সিগারেট খাওয়া একটা প্যাশন হয়ে গেছে। এছাড়া ই-সিগারেটও অনেক বেড়ে গেছে। এটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার হয়। এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।

তামাক পণ্যে ট্যাক্স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সিগারেট খুচরা বিক্রি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংসদ সদস্যরা জানান, সিগারেটের প্যাকেটে যে ট্যাগ লাগানো থাকে খুচরা বিক্রি হলে সেটা সবার নজরে আসে না। এছাড়া খুচরা বিক্রি বন্ধ হলে সিগারেট বিক্রির হারও কমবে।

তামাক বন্ধ করার জন্য ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধি সবচেয়ে বড় কার্যকর বিষয় জানিয়ে তামাক পণ্যের সহজলভ্যতা রোধে পরামর্শ দেন আয়োজকরা।

পরামর্শগুলো হলো- বর্তমানে তামাক পণ্যের ঘোষিত খুচরা মূল্যের ওপর যে অ্যাড-ভেলোরেম (অর্থাৎ ঘোষিত খুচরা মূল্যের শতাংশ হিসেবে) সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা আছে। তার পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই সম্পূরক শুল্ক নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি করা।

ফিল্টারবিহীন বিড়ি (২৫ শলাকার প্যাকেট) ও ফিল্টারযুক্ত বিড়ির (২০ শলাকার প্যাকেট) ঘোষিত ন্যূনতম খুচরা মূল্য যথাক্রমে ১৮ টাকা থেকে ২৫ টাকা এবং ১৯ টাকা থেকে ২০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলোর ওপর সম্পূরক শুল্ক হবে যথাক্রমে ১১ দশমিক ২৫ টাকা ও ৯ টাকা।

নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম- এই চার স্তরের সিগারেটের (১০ শলাকার প্যাকেটের) ঘোষিত ন্যূনতম খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩৯ থেকে ৫০ টাকা, ৬৩ থেকে ৭৫ টাকা, ১০২ থেকে ১২০ টাকা ও ১৩৫ থেকে ১৫০ টাকা করা। প্রস্তাবনা অনুসারে এগুলোর ওপর সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক হবে যথাক্রমে ৩২ দশমিক ৫০ টাকা, ৪৮ দশমিক ৭৫ টাকা, ৭৮ টাকা ও ৯৭ দশমিক ৫০ টাকা।

ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য জর্দা ও গুলের প্রতি দশ গ্রামের ঘোষিত ন্যূনতম খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও ২০ থেকে ২৫ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলোর ওপর সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক হবে যথাক্রমে ২৭ টাকা ও ২৫ টাকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া তামাক ব্যবহারের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে; বিস্ময় প্রকাশ করে সংসদ সদস্য র আ ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, যারা মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারা চায় মাদক বেশি ব্যবহার হোক। তারা নানাভাবে মানুষকে আগ্রহী করে তোলে। এখন সিসা বার, হুক্কা এসব নিয়ে বার হচ্ছে। এসবও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে। সিগারেট ব্যবহার কিছুটা কমলেও এখন মাদক বেশি ব্যবহার হচ্ছে।

উন্নয়ন সমন্বয়ের জ্যেষ্ঠ প্রকল্প সহকারী শাহীন উল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহিলা আসন ১৭ এর সংসদ সদস্য হাবিবা রহমান খান, মহিলা আসন ২৬ এর সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা, গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সিটিএফকের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তৈয়বুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা অর্থনীতি/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close