দেশজুড়ে

নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার চেয়ে বড় আর কিছু হয় না

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ত্যাগের মধ্য দিয়ে একটা সংসারকে সুন্দর করা যায়, একটা প্রতিষ্ঠানকে সুন্দর করা যায়, একটা দেশকে সুন্দর করা যায়। চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার চেয়ে বড় আর কিছু হয় না। আমার মা ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেই দৃষ্টান্তই দেখিয়ে গেছেন।’

গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি কাজে আমার মাকে দেখেছি বাবার পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। আমার মা যখন কারাগারে দেখা করতে যেতেন, তখন মা নিজেই বলতেন—চিন্তার কিছু নেই। আমাদের মানুষ করার দায়িত্ব আমার মায়ের হাতেই ছিল। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ প্রতিটি সংগঠনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। বাবার নির্দেশনা নিয়ে এসে সেগুলো পৌঁছে দেওয়া—এই কাজগুলো তিনি খুব দক্ষতার সঙ্গে করতেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাবা-মায়ের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছি মাটির দিকে তাকিয়ে চলার। অন্তত তোমার চেয়ে খারাপ অবস্থায় কে আছে তাকে দেখো। ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল জারি হওয়ার পর আব্বা আলফা ইনস্যুরেন্সে চাকরি করতেন। এই দুই বছর আমার মা সংসারের স্বাদ পেয়েছিলেন। কারণ তখন রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। স্বামীকে কাছে না পাওয়া নিয়েও তাঁর কোনো অনুযোগ ছিল না। এমনকি মৃত্যুর দিন আমার মা জীবন ভিক্ষাও চাননি। তিনি সাহসের সঙ্গে সেখানে বলেছিলেন—আমার স্বামীকে হত্যা করেছ, আমি তাঁর কাছেই যাব। সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে তাঁর (বেগম মুজিব) জন্মদিন। আব্বার যে আদর্শ, সেই আদর্শ তিনি ধারণ করেছিলেন। আর সেটা ধারণ করেই তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন। আমি মনে করি, আমাদের দেশের মেয়েদেরও সেই আদর্শ নিয়ে চলা উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের এই সংকট থেকে দেশকে আমরা অবশ্যই উত্তরণ ঘটাব। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব। সেখানে আমার মায়ের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না, লাখো শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী রওশন আক্তার। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কর্মময় জীবনের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close