বিশ্বজুড়ে

মার্কিন নৌবাহিনীতে মহিলা সহকর্মীদের ‘ধর্ষণের তালিকা’! প্রকাশের পর চাঞ্চল্য

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিনে (US Navy submarine) থাকা নাবিকদের তৈরি এক তালিকার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেই তালিকায় মহিলা ক্রু সদস্যদের শারীরিক গঠন অনুযায়ী রীতিমতো ক্রমপর্যায় তৈরি করা হয়েছে! গত শুক্রবার মিলিটারি.কম (Military.com) ওয়েবসাইটে ওই তালিকা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। তথ্য জানার অধিকার আইনের দাবিতে ওই বিষয়টি সকলের সামনে আনা হল।

ওই ওয়েবসাইটের তদন্ত রিপোর্ট কী বলছে? ৭৪ পাতার ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-র পুরুষ সদস্যদের মধ্যে মহিলাদের নাম নিয়ে তৈরি করা দু’টো তালিকা ছড়িয়ে পড়েছে। ৩২ জন মহিলাকে নিয়ে ওই দুই তালিকা তৈরি হয়েছে। এই ৩২ জন মহিলাও সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-তে নিযুক্ত।

দু’টো তালিকার একটিতে ৩২ জন মহিলাকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তারকা চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যটিতে মহিলাদের নামের পাশে যৌনতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে। কোন মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে কী ধরনের যৌন কার্যকলাপ চালানো হবে, তা লেখা রয়েছে তাঁদের নামের পাশে। যার প্রত্যেকটিই আক্রমণাত্মক যৌনতার পরিচয়।

মিলিটারি.কম-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দু’টো তালিকাই সাবমেরিনের গোল্ড ক্রু-র সমস্ত পুরুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। দু’টো তালিকাই প্রথমে গোল্ড ক্রু-র কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মধ্যে রাখা ছিল। প্রথমে ক্রু-র এক সদস্য সেটা দেখতে পান। প্রিন্ট আউট বার করে তিনি তাঁর আধিকারিককে বিষয়টি জানান। তারপর বিষয়টা ক্রমশঃ জানাজানি হয়ে যায় এবং সমস্ত পুরুষ সদস্যের কাছেও তালিকার প্রিন্ট আউট ছড়িয়ে পড়ে।

সাবমেরিনটি ভারত মহাসাগরে থাকাকালীন কার্চার ছাড়াও নৌবাহিনীর অন্য অফিসাররা ওই তালিকার কথা জানতে পারেন এবং একটি তদন্ত শুরু করেন। তবে সেই তদন্ত কবে শুরু হয়েছিল, সেটা এখনও অস্পষ্ট নয়।

মিলিটারি.কম জানাচ্ছে, সেই তদন্তে কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গুজব শোনা যাচ্ছে, জাহাজের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। একজন মহিলা মিলিটারি.কম-কে জানিয়েছেন, তিনি জাহাজের সব পুরুষ সদস্যদেরই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। আর একজন জানিয়েছেন, তিনি ওই তালিকার ছবি নিজের পরিবারকে পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন নেতৃত্বের সদস্যরা হয়তো বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে দেবেন।

রিয়ার অ্যাডমিরাল জেফ জ্যাবলন, যিনি ওই সাবমেরিনের দশম গ্রুপের কমান্ডার ছিলেন, তিনি মিলিটারি.কম-কে চিঠি লিখে জানান, উচ্চ আধিকারিকেরা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তেমন কিছু কারও জানা নেই।

‘বহু মহিলাই নিজেদের সুরক্ষার ব্যাপারে সচেতন হয়ে গিয়েছেন।’ তিনি লেখেন, ‘এবং পুরুষ সদস্যরাও ওই তালিকার কথা জেনে অস্বস্তিতে পড়েছেন।’

তদন্তের শেষে কার্চারকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাঁচ মাস ওই দায়িত্বে ছিলেন তিনি। জ্যাবলন পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কার্চার ওই ধরনের বিরাট পদের উপযুক্ত ছিলেন না।

মিলিটারি.কম-কে মার্কিন নৌবাহিনীর মুখপাত্র সারাহ সেলফ-কাইলার জানিয়েছেন, দু’জন নাবিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। যাঁরা বিষয়টিকে ঠিকভাবে গুরুত্ব দেননি তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে। তদন্তে দেখা গিয়েছে, সমানাধিকার সংক্রান্ত বিষয়টিও ঠিকভাবে কার্যকর করা হয়নি।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close