দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

সরকারিভাবে ধানের মূল্য ১০৪০ টাকা, বাইরের বাজারে ৫৫০

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: ধানের বাম্পার ফলনেও হাসি নেই উপকূলের কৃষকদের মুখে। সরকার খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে যে দামে ধান কিনছে তার অর্ধেক দামে স্থানীয় হাট বাজারগুলোতে ফরিয়া ও ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অধিকাংশ কৃষক। তবে ধানের দাম কমলেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে চালের দাম। তাইতো বাজার তদারকির দাবি কৃষকদের।

পটুয়াখালী জেলায় এবারই প্রথমবারের মতো আমন ধান সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২০ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের এই সংগ্রহ অভিযান চলমান থাকবে। এ জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে সরবরাহকৃত তালিকা ধরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে।

একজন কৃষকের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিকটন এবং সর্বনিম্ন ১২০ কেজি ধান সংগ্রহ করবে খাদ্য বিভাগ। এর ফলে সরকারের খাদ্য মজুদ বৃদ্ধি পাবার পাশাপাশি কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে।

তবে তালিকায় না থাকা কৃষকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই ব্যাপারীদের কাছে কম মূল্যে ধান বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি গোডাউনে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান বিক্রি করতে পারলেও স্থানীয় বাজারে ১৩ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে অধিকাংশ কৃষকদের।

সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে জেলার ৮টি উপজেলা থেকে ১৫ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করছে। তবে অনেক এলাকায় এখনও সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।

স্থানীয় বাজারে ধানের দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে কৃষকরা বলেন, আমরা ঋণ নিয়ে চাষ করি। তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই ঋণ পরিশোধের জন্য বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ক্ষতি হলেও কিছু করার নেই। তাছাড়া আমাদের কাছে ধান মজুদ করে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। সে জন্য বাধ্য হয়েই দ্রুত ধান বিক্রি করে দিতে হয়। সরকারিভাবে যদি আমরাও তালিকাভুক্ত হতে পারতাম তাহলে লাভবান হতাম।

এদিকে, প্রকৃত কৃষকরা যাতে সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করতে পারেন সে জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করেছে। জেলার আট উপজেলায় বৃহৎ চাষি, মাঝারি চাষি এবং প্রান্তিক চাষি বাছাই করে ২১ হাজার ৯৩০ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। সেই তালিকা অনুসারে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানালেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত।

যে সব কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান সরবরাহ করবেন তাদের জন্য কিছু বিষয় অনুসরণ করার পরামর্শ দিলেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. বি এম শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ধানের আর্দ্রতা ১৮% এবং চিটার পরিমাণ .৫% হতে হবে মানে ২০০ ধানে একটি চিটা থাকতে পারবে। এ ছাড়া ধানের মূল্য সরাসরি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। ফলে এখানে মধ্যস্বত্বভোগীর কোনো প্রভাব থাকবে না।

সরকারি হিসেবে কৃষকদের প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে ১৮ টাকা করে ব্যয় হলেও সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে প্রতিমন ধান ১ হাজার ৪০ টাকায় ক্রয় করছে। তবে স্থানীয় বাজারে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে কৃষকদের প্রতিমন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।

ব্যাপারীদের সঙ্গে দামের বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, আমাদের এই অঞ্চলে অটো রাইস মিলের সংখ্যা কম। সে কারণে রাইস মিল মালিকরা ধানের দাম বেশি দিতে চায় না। আমাদের লাভ ও ব্যয় মিলিয়ে এই দামেই ধান কিনতে হয়।

/এনএ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close