বিনোদন

সেদিন খুব কেঁদেছিলামঃ কিং খান

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ আজমীর শরীফের মসজিদে প্রবেশের সময় ছেলেটি বুঝতে পারেন, তার টাকার ব্যাগটা কোথাও পড়েছে। মাকে ভেতরে রেখেই ব্যাগটা খুঁজতে লাগলেন। কোণায় বসে থাকা একজন বলে উঠলেন, ‘তুম কেয়া তুমহারা বাটওয়া ঢুন্ড রাহে হো, জিসমে ১০০ কে কুছ নোট থে?’। কথাটি শুনে ছেলেটি অবাক হয়ে লোকটির দিকে তাকায়। লোকটি হেসে বলেন, ‘তুহ কুছ ১০০ কেলিয়ে রো রাহা হে! যাবকি কারোরো আনে ওয়ালে হে।’ বিস্ময়কর সে কথাটিই সত্যি হয়েছে। ছেলেটি বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী অভিনেতাদের মধ্যে একজন। তিনি আর কেউ নন, আজকের শাহরুখ খান। যাকে আমরা ‘বলিউড বাদশা’, ‘কিং অব রোম্যান্স’ আর ‘কিং খান’ নামেও চিনি।

মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবাকে হারানোর পর মা লতিফ ফাতিমা হয়ে ওঠেন শাহরুখের সব। মা না থাকলে হয়তো আজকের শাহরুখ খানকে আমরা চিনতামই না। মায়ের হাত ধরেই হিন্দি সিনেমার সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে শাহরুখ খানের। ফাতিমাই শাহরুখকে ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন। সে আলাপের সুবাদেই শাহরুখ সুযোগ পান ‘ফৌজি’ নামক টেলিভিশন ধারাবাহিকে।

মা সর্ম্পকে শাহরুখ তার জীবনীতে লিখেছেন, ‘মা কোনো কিছুতেই জোর করতেন না। আমি বলেছিলাম হয় অভিনয়, না হয় চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হব, তখনও মা আমাকে আটকাননি। আমি চেয়েছিলাম চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে উচ্চশিক্ষা নিতে, মা তাতেও রাজি ছিলেন।’

গৌরি যখন শাহরুখকে না জানিয়ে তার জীবন থেকে কার্যত অদৃশ্য হয়ে যান তখন ফাতিমা ১০ হাজার রুপি দিয়ে গৌরিকে বাড়ি নিয়ে আসতে বলেন। এই স্মৃতিচারণ করেন শাহরুখ, যেটি ‘শাহরুখ ক্যান’ নামক বইয়ে প্রকাশ পেয়েছে। কথাটি ছিল ঠিক এমন, ‘আমি আমার মায়ের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতাম। গৌরিকে বিয়ে করার কথা মাকে জানানোর পর, তিনি একবারও জানতে চাননি মেয়েটি মুসলিম নাকি চাইনিজ।’

শাহরুখ যখন একাধিক সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত তখনই একদিন খবর আসে, তার মা অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। সবকিছু ফেলে মায়ের কাছে ছুটে যান শাহরুখ। নিজের সবটুকু দিয়ে মায়ের দেখাশোনা করতে লাগেন। একদিন ওষুধ কিনতে বেরিয়ে ফিরে এসে শাহরুখ জানতে পারেন, মা তাকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

‘মায়ের মৃত্যুতে আমি বুঝতে পেরেছিলাম, কোনও কিছুই স্থায়ী নয়। আমি সবকিছু আশা করা ছেড়ে দিয়েছিলাম। এ ঘটনা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেদিন খুব কেঁদেছিলাম।’ মায়ের মৃত্যুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিজের আত্মজীবনীতে এমনটাই লিখেন আজকের বলিউড বাদশা।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close