স্বাস্থ্য

স্ট্রোক প্রতিরোধে সাত পরামর্শ

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী:মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্ত সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার ফলে যে অব্যবস্থা দ্রুত জন্ম নেয় তাকে বলা হয় স্ট্রোক। ‘স্ট্রোক’ ছোট একটি শব্দ কিন্তু এর ব্যাপ্তি ব্যাপক। স্ট্রোক মানে নিশ্চিত মৃত্যু না হলেও মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া। মস্তিষ্কে রক্তচলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত হতে শুরু করে যা অনেকসময় প্রাণ হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

স্ট্রোক সাধারণত দুই টাইপের হয়। ১. ইসচেমিক স্ট্রোক (আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়া)। ২. হেমোরেজিক স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ)।

স্ট্রোক প্রতিরোধে পরামর্শ-

১. স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে হলে আপনাকে রক্তচাপ কমাতে হব। নিশ্চয় জানেন, উচ্চ রক্তচাপ হলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব চেয়ে বড় ঝুঁকি। রক্তচাপ ১২০/৮০ নিচে থাকলে খুব ভাল, অন্তত ১৩৫/৮৫ এর নিচে রাখতেই হবে।

রক্তচাপ কমাতে যা করবেন:

* লবন খাওয়া কমান। প্লেটে লবন খাবেনই না। দিনে আধ চামচের বেশি না (১৫০০ মিলিগ্রাম)।

* হাই ফ্যাট ফুড (যেমন- বার্গার, পনির, আইসক্রিম) এড়িয়ে যান।

* দিনে খাবেন ৪-৫ কাপ ফল সবজি। একবেলা মাছ (অন্তত সপ্তাহে ৩-৪ দিন), আর আটার রুটি, লাল চালের ভাত।

* ব্যায়াম করুন অন্তত আধ ঘণ্টা হাঁটুন। দৌড়ান, সাঁতার কাটুন।

* ধূমপান, মদ্যপান বর্জন করুন।

২. স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে হলে ওজন কমান (বেশি হলে)। স্থুলতা হলো স্ট্রোকের বড় ঝুঁকি। বিএমআই ২৫ এর নিচে রাখুন। কোমর পুরুষের ৪০ ইঞ্চির কম, মেয়েদের ৩৫ ইঞ্চির কম। দিনে ১৫০০ -২০০০ ক্যালোরির বেশি না (বিএমআইআর শ্রমের ভিত্তিতে)।

৩. ব্যায়াম করুন। অন্তত সপ্তাহে ৫দিন আধাঘণ্টা দ্রুত হাঁটা, দৌঁড়ানো, সাঁতার, খেলাধুলা। এছাড়াও শরীর সচল, কর্মমূখর রাখুন সারাদিন।

৪. মদ্যপান বাদ দিন।

৫. এট্রিইয়াল ফিব্রিলাসন থাকলে চিকিৎসা করান। হৃদছন্দে অনিয়ম থাকলে হার্টে রক্ত জমাট হতে পারে আর সেই জমাট খণ্ড বয়ে যেতে পারে মগজের ধমনীতে আর রক্ত প্রবাহ রোধ করে স্ট্রোক ঘটাতে পারে। বুক ধড়পড় বা শ্বাস কষ্ট থাকলে ডাক্তার দেখান। প্রয়োজনে ডাক্তার ব্লাড থিনার দিতে পারেন।

৬. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রক্তের গ্লুকোজ যেন নিয়ন্ত্রনে থাকে ডাক্তারের পরামর্শ, খাদ্য বিধি, ব্যায়াম, ওষুধ, গ্লুকোজ মানের নজরদারি রাখবে নিয়ন্ত্রণে।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close