দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

১০০ পেরিয়ে নটআউট পেঁয়াজ

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ গতকাল সন্ধ্যায় ৭০ টাকা কেজি দরে ২ কেজি পেঁয়াজ কিনে বাড়ি ফেরেন সুমন আলী। বাড়ি ফিরতেই স্ত্রী রুমা জানান, পেঁয়াজের দাম নাকি আরও বাড়বে। শুনে সুমন আলী ভাবেন, সকালে গিয়ে আরও কিছু পেঁয়াজ কিনে আনবেন। সকালে বাজারে গিয়ে হতভম্ব তিনি। দেখলেন প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয়ে গেছে ১১০ টাকা। বিক্রেতা বললেন, ‘নিয়ে নেন স্যার, দাম আরও বাড়ব।’

পেঁয়াজ রপ্তানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত—গতকাল রোববার এ সংবাদে দেশের বাজারে হু হু করে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে আজ সোমবার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে। ভারত ও মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। খুচরা বাজারে দেশি আর ভারতীয় পেঁয়াজের দামের কোনো ভেদাভেদ নেই। সব পেঁয়াজই এখন কেজিপ্রতি ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরটি গতকাল বেলা তিনটার দিকে ভোমরা ও সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আসে। তখনই বাংলাদেশের পথে থাকা সব ট্রাক আটকে দেয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়তে সময় লাগেনি।

যেমন, কারওয়ান বাজারের পাইকারি বিক্রেতা মো. ফয়েজ গতকাল দুপুরের পরও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৭২ টাকায়। সন্ধ্যায় তাঁর দোকানে দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা যায়। ফয়েজ বলেন, দুপুরের পর তিনি যেসব পেঁয়াজ কিনেছেন, তার দাম কেজিপ্রতি ৭৫ টাকার বেশি পড়েছে।

এর আগে ভারত ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম মূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয়। এক দিন পর বাংলাদেশের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বাড়ে প্রায় ১৫ টাকা। এরপর আরও কয়েক দফা দাম বেড়ে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল।

বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজার অনেকটা ভারতের দামের ওপর নির্ভরশীল। ভারতীয় পত্রিকা ইন্ডিয়া টুডে গতকাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দেশটির রাজধানী দিল্লিতে ৭০-৮০ রুপি (৮৪ থেকে ৯৬ টাকা) কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের ধারণা, প্রতিবছর চাহিদার ৬০-৭০ শতাংশ পেঁয়াজ দেশে উৎপাদন হয়। বাকিটা আমদানি হয়। আমদানির প্রায় পুরোটার উৎস ভারত। অবশ্য এখন আমদানিকারকেরা মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, একই বছর আমদানি হয়েছে প্রায় ১০ লাখ ৯২ হাজার টন।

#এমএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close