দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

কর্ণফুলী নদীতে জমেছে ২০ ফুট পলিথিনের স্তর

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রায় ২০ ফুট গভীর পর্যন্ত জমেছে পলিথিনের স্তর। যা খনন করতে গিয়ে একটি কাটার মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। অপর দুইটি মেশিন দিয়েও খনন কাজ করা যাচ্ছে না। ফলে নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে।

গত বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের নবগঠিত উপদেষ্টা মন্ডলীর সভায় এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বন্দরের সচিব ওমর ফারুক। তিনি জানান, এটি চট্টগ্রাম বন্দরের উপদেষ্টামণ্ডলীর প্রথম সভা। সভায় কর্ণফুলী নদীর ক্যাপটাল ড্রেজিং যে কোনো মূল্যে সম্পন্ন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের বিষয়ে আশার আলো দেখাচ্ছে চীনা কোম্পানি। চীনা কোম্পানি বলছে, কাটার প্রযুক্তি দিয়ে কর্ণফুলীর তলদেশ থেকে ২০ ফুট পুরু পলিথিনের স্তর কাটা যাবে না। এতে নদীর তলদেশ থেকে মাটি তুলে আনা অসম্ভব। গ্রেভ শিপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে। এতে অন্তত ত্রিশ শতাংশ বেশি মাটি তোলা যাবে। খরচও বাড়বে। চীনা কোমপানির এ প্রস্তাবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বুয়েটসহ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বন্দরের প্রশিক্ষণ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান ওমর ফারুক।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সদরঘাট টু বাকলিয়ার চর ড্রেজিং প্রকল্প নামে নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার চওড়া এলাকায় ড্রেজিং করার কথা। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে চীনা কোমপানি ই-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পটির কাজ করছে। প্রকল্প এলাকা থেকে ৪২ লাখ ঘনমিটার মাটি ও বালি তোলার মাধ্যমে ড্রেজিং সমপন্ন করা হবে। ড্রেজিং থেকে উত্তোলিত বালি ও মাটি বন্দরের হামিদচর এলাকা ভরাট করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু গত এক বছরে প্রকল্পের কাজ ৩৫ শতাংশও শেষ হয়নি। নদীর তলদেশে ছয় মিটার (প্রায় বিশ ফুট) পর্যন্ত পলিথিন স্তর থাকায় কাটার প্রযুক্তি দিয়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং পলিথিনের স্তর কাটতে গিয়ে একটি কাটার মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। অপর দুটি কাটার মেশিন দিয়েও পলিথিনের এ স্তর কাটা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কর্ণফুলীর তলদেশে মাটির সন্ধান এখনো পায়নি এই কাটার মেশিনগুলো।

এ অবস্থায় চীনা কোমপানি থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়, কাটার গ্রেভ শিপ পদ্ধতিতেই কর্ণফুলীর তলদেশে ড্রেজিং করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় কর্ণফুলীর তলদেশের বর্জ্য গ্রেভ দিয়ে কেটে উপরে তুলে একটি বার্জে রাখা হবে। ওই বার্জ পরবর্তীতে নির্দিষ্টস্থানে নিয়ে মাটি ফেলে আসবে।
এ প্রক্রিয়ায় ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে গেলে ৪২ লাখ ঘনমিটারের স্থলে প্রায় ৫৫ লাখ ঘনমিটার মাটি উত্তোলন করতে হবে। এতে প্রকল্প ব্যয়ও বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্প পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরিফ বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে যে হারে পলিথিনের স্তর পাওয়া যাচ্ছে তা সত্যিই বিপজ্জনক। নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং সমপন্ন না হলে ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। তাই ড্রেজিং করে একটি স্রোত তৈরি না করে দেয়া পর্যন্ত এই নদী বিপদমুক্ত ভাবা যাবে না।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close