প্রধান শিরোনামবিনোদন

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিনোদন প্রতিবেদকঃ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৯ জুলাই)। ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। ৬৩ বছর বয়সে মারা গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে।

তিনি ছিলেন কথার জাদুকর। তার লেখায় এমন যাদু ছড়িয়েছেন, যে যাদুমন্ত্রে বিহ্বল পাঠক। উপন্যাস, গান, সিনেমা- যেখানেই হাত দিয়েছেন, কথা-ছন্দ-দৃশ্যের জাদুতে পাঠক ও শ্রোতা-দর্শক একখানে হয়ে গেছেন। বলছি নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কথা।

হুমায়ূন আহমেদের প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা, তাই বৃষ্টির দিন তিনি দারুণ উপভোগ করতেন। তার মরদেহ দেশে আনা হলে, বিষন্ন হয়ে গিয়েছিল প্রকৃতিও। পুরোটা দিন বৃষ্টি হয়েছিল। তবে কোন বাধাই তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিরত রাখতে পারেনি ভক্ত ও সাধারণ মানুষদের। গাজীপুরের শালবনে বৃষ্টিস্নাত হয়ে অগণিত মুসল্লি নামাজে জানাজায় অংশ নেন। তার নিজের গড়া নূহাশ পল্লীতেই সমাহিত করা হয় এই কথাসাহিত্যিককে।

তার লেখা প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালে। এটি প্রকাশের পর লেখক ও সাহিত্যপ্রেমীদের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ আলোচিত হয়ে উঠেন। এরপর প্রকাশিত হয় তার লেখা- শঙ্খ নীল কারাগার, রজনী, গৌরীপুর জংশন, অয়োময়, দূরে কোথাও, ফেরা, কোথাও কেউ নেই, অচিনপুর, আমার আছে জল, এই সব দিনরাত্রিসহ অসংখ্য গল্প ও উপন্যাস।

আশির দশকে বিটিভিতে প্রচারিত হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত ধারাবাহিক নাটক ‘কোথাও কেউ নেই’ এ বাকের ভাইয়ের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে বাস্তব জীবনে ঢাকার রাজপথে মিছিল পর্যন্ত হয়েছিল। যা অকল্পনীয় বিষয়। তার নির্মিত টিভি সিরিজ ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘অয়োময়’ ও ‘বহুব্রীহি’ যে রাতে প্রচারিত হতো তখন শহর, বন্দর, হাটবাজার ফাঁকা হয়ে যেত।

হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো সর্ব সাধারণ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। ১৯৯৪ সালে তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ আটটি পুরস্কার লাভ করে। তার নির্মিত অন্যান্য সমাদৃত চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্যামল ছায়া’, ও ‘ঘেটু পুত্র কমলা’। ‘শ্যামল ছায়া’, ও ‘ঘেটু পুত্র কমলা’ চলচ্চিত্র দুটি বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কারের জন্য দাখিল করা হয়েছিল। এছাড়া ‘ঘেটু পুত্র কমলা’ চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও এক নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি করে গেছেন। অমর সৃষ্টি জনপ্রিয় চরিত্র মিসির আলী ও হিমুর স্রষ্টাও তিনি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার , লেখক শিবির পুরস্কার, বাসসাস পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

জনপ্রিয় কথাশিল্পী হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি।।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close