প্রধান শিরোনামস্বাস্থ্য

দেশেই টিকা উৎপাদন, সোমবার চুক্তি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকায় চীনা দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, সোমবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ অ্যান্ড সার্জনস-বিসিপিএস মিলনায়তনে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তিটি স্বাক্ষর হলে চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের সঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের পথ সুগম হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের পর দেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে সময় লাগতে পারে দুই মাস।

চুক্তির আওতায় চীন থেকে সিনোফার্মের টিকা তৈরির কাঁচামাল দেশে এনে বোতলজাত করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এতে দেশে তুলনামূলক কম দামে টিকা মিলবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে সোমবার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংও।

এদিকে টিকার মজুত কিছুটা কমে যাওয়ায় আপাতত সহসাই হচ্ছে না গণটিকাদান ক্যাম্পেইন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

গত সপ্তাহে দেশজুড়েই পরিচালিত হয় কোভিড-১৯ টিকা ক্যাম্পেইন। যাতে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৬ দিনে প্রথম ডোজ টিকার আওতায় আসেন রেকর্ড অর্ধকোটির বেশি মানুষ। এতে সম্প্রসারিত টিকা কার্যক্রমে স্বাস্থ্য বিভাগের সক্ষমতা আবারও যাচাই হয়েছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, টিকা দেওয়ার সক্ষমতা যে আমাদের আছে, সেটা প্রমাণ হয়েছে। একটা ট্রায়ালও হয়ে গেছে। ক্যাম্পেইনের প্রথম দিন একদিনে ৩৪ লাখ টিকা আমরা দিয়েছি। এখন টিকার প্রাপ্যতা সাপেক্ষে আগামীতে আমাদের কার্যক্রম চলবে। যদি হাতে টিকা অনেক পরিমাণে চলে আসে, তাহলে শহরে ও গ্রামে দুই জায়গাতেই কার্যক্রম চলমান থাকবে। যদি কম থাকে, সেটাও আমাদের ওইভাবেই ডিজাইন করে নিতে হবে। সব নির্ভর করছে টিকা মজুতের ওপর।

বর্তমানে দেশে আসা টিকার বড় অংশই চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের। তাই রাজধানীসহ সারা দেশেই এখন প্রথম ডোজ প্রয়োগ হচ্ছে কেবল মাত্র সিনোফার্মের টিকা। অন্যসব টিকার মজুত রয়েছে কেবল দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিতের। সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, তাহলে কি সরকার আবারও একক কোনো টিকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে?

জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকার বিষয়ে আমাদের বিশেষ কোনো অগ্রাধিকার নেই। আমরা বিশেষ কোনো টিকার প্রতি দুর্বল, সে রকম নয়। আমরা যেখান থেকে টিকা পাচ্ছি, যারা দিতে পারছে; তাদের কাছ থেকেই আমরা নিচ্ছি। চীন টিকা দিতে পারছে, সে কারণে আমরা নিচ্ছি। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি, কবে তারা দেবে। কোভ্যাক্সের কাছ থেকে ৭ কোটি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া ভারতের কাছ থেকে ২ কোটি ৩০ লাখ টিকা এখনো পাওনা আছে। আমরা তাগাদা দিচ্ছি তাদের। তারা এখনো কিছু আমাদের জানায়নি। তারা আশ্বাস দিয়েছিল আগস্ট থেকে টিকা দেওয়া শুরু করবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো শিডিউল পাইনি।

এদিকে মহামারি করোনাভাইরাসে শনিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে রোববার (১৫ আগস্ট) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করে মারা গেছেন আরও ১৮৭ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৭৫ জনে।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ৬৮৪ জনের দেহে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৯০২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার একজনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ। রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৩৭১ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ লাখ ৯২ হাজার ৬৯৮ জন।

/একে

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close