প্রধান শিরোনাম

বাংলাদেশের অনুশীলন কতটা হলো, বলা মুশকিল

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছে ৯৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। কার্ডিফে মঙ্গলবার ভারতের ৩৫৯ রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে বাংলাদেশ থমকে যায় ২৬৪ রানে।

প্রস্তুতি ম্যাচে জয়-পরাজয়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন। প্রয়োজন মতো নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়া। বাংলাদেশের অনুশীলন কতটা হলো, বলা মুশকিল। তবে স্পিনাররা নিতে পারেননি সুযোগ। চাপহীন ম্যাচে সাড়ে তিনশ তাড়া করার সাহস ও পরিকল্পনা দেখাতে পারেনি ব্যাটসম্যানরা।

মেঘলা আকাশের নিচে টস জিতে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। টসের পর নামা বৃষ্টিতে খেলা শুরু হয় মিনিট দশেক দেরিতে। দুই বল পর আবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ২০ মিনিট। কন্ডিশন তখন খানিকটা পেস সহায়ক। সেটি কাজে লাগান মুস্তাফিজ ও মাশরাফি।

নতুন বলে ইদানিং নিয়মিত না হলেও মুস্তাফিজকে দিয়েই এ দিন শুরু করেন মাশরাফি। দারুণ বোলিংয়ে মুস্তাফিজও মেলে ধরেন নিজেকে। বোলিং করেছেন ১৩৫ থেকে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে। লাইন-লেংথ ছিল ভালো। ভারতের দুই ওপেনারকে ভুগিয়েছেনও বেশ। ভেতরে ঢোকা বলে শিখর ধাওয়ানকে ফিরিয়ে তিনিই এনে দেন প্রথম ব্রেক থ্রু।

মাশরাফি আরেক পাশে যথারীতি ছিলেন আঁটসাঁট। শুরু করেছিলেন টানা দুটি মেডেনে। পরের ওভারগুলোতেও হাত খুলতে দেননি ভারতের আগ্রাসী টপ অর্ডারকে।

রোহিত শর্মা ধুঁকছিলেন শুরু থেকেই। বিরাট কোহলি সচল রাখেন রানের চাকা। ভারত অধিনায়ক অবশ্য শুরুতেই সুযোগ মতো দিয়েছিলেন। মুস্তাফিজের বলে শূন্য রানে তার ব্যাট ছুঁয়ে আসা বল বাউন্ডারিতে যায় কিপার ও দ্বিতীয় স্লিপের মাঝ দিয়ে।

রোহিতের যন্ত্রণা শেষ হয় রুবেল হোসেনের বাড়তি লাফানো বলে আলসে এক শটে। ১৯ রান করে ফেরেন ৪২ বলে।

যতো সময় গড়াচ্ছিল, কোহলি হয়ে উঠছিলেন বিপজ্জনক। ৪৬ বলে ৪৭ রান করা ব্যাটসম্যানকে দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করেছেন সাইফ।

উইকেটে তখন রাহুল ও বিজয় শঙ্কর, ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে চার নম্বরের সম্ভাব্য দুই দাবিদার। কিন্তু দুজনের জুটি জমতে দেননি রুবেল। বাড়তি লাফানো বলে শঙ্কর শেষ ২ রানেই।

রাহুলের ওপর থেকে চাপও হয়তো সরে গেল। বেড়ে গেল ব্যাটের ধার। সঙ্গ দিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দুজনই পেয়ে বসেন বাংলাদেশের স্পিনারদের, ক্রমেই হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। গড়ে ওঠে জুটি, বাড়তে থাকে রানের গতি। সাকিব, মিরাজ, মোসাদ্দেকদের পাত্তাই দেননি দুজন।

চার নম্বরে জায়গা সিলগালা করে নিতে রাহুল করে ফেলেন সেঞ্চুরি। ধোনি পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৪০ বলে। দুই ব্যাটসম্যানের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের মাঝেও বিস্ময়কর ভাবে রান আটকে রাখেন সাব্বির। ৯৯ বলে ১০৮ রান করে রাহুল ফেরেন এই লেগ স্পিনারের বলেই।

৭৯ রানে সাব্বিরের বলেই সুযোগ দিয়েছিলেন ধোনি। লং অনে ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন দাস। প্রথম ৪ ওভারে কেবল ১৫ রান দেওয়া সাব্বিরের ওই ওভারেই আসে ১৫। রুবেলকে ছক্কায় উড়িয়ে ভারতকে তিনশ পার করান ধোনি, আবু জায়েদকে ছক্কায় নিজে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ৭৩ বলে। শেষ দিকে ফিরে সাকিব নেন ২ উইকেট। শেষ ১০ ওভারে ভারত তোলে ১১৬ রান।

তামিম ইকবাল ছিলেন বিশ্রামে। রান তাড়ায় লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। তবে সেই আশার আলো মিলিয়ে যায় জাসপ্রিত বুমরাহর ছোবলে। ২৫ রান করা সৌম্যকে ফিরিয়ে ৪৯ রানের জুটি ভাঙেন ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলার। পরের বলেই অসাধারণ এক ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন সাকিবকে।

এরপর জুটি হয়েছে। কিন্তু রান তাড়ার সম্ভাবনা বা তাগিদ, ততটা দেখা যায়নি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় উইকেটে লিটন ও মুশফিকুর রহিম গড়েন ১২০ রানের জুটি।

তবে শুরুতে বেশ সময় নেওয়ায় বাড়তে থাকে প্রয়োজনীয় রান রেট। ফিফটির পর যখন রান বাড়ানোর তাড়া দুজনের ব্যাটে, তখনই ভাঙে জুটি। ৯০ বলে ৭৩ করে লিটন স্টাম্পড হন যুজবেন্দ্র চেহেলের বলে।

এবারও ভারত পায় জোড়া উইকেট। চেহেলের গুগলিতে মিঠুন এলবিডব্লিউ প্রথম বলেই। এরপর মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির ও মোসাদ্দেক পারেননি নিজেদের অনুশীলনের পাশাপাশি ম্যাচ জমিয়ে তুলতে। মুশফিকের ইনিংসটিও শেষ হয়েছে সেঞ্চুরি না পাওয়ার হতাশায়। ৯৪ বলে ৯০ করে বোল্ড হয়েছেন কুলদীপকে সুইপ করতে গিয়ে।

শেষ দিকে মিরাজ ও সাইফ খানিকটা কমিয়েছেন ব্যবধান। তাতে অবশ্য খুব বেশি যায়-আসেনি। খুব একটা সমৃদ্ধ হয়নি বাংলাদেশের প্রাপ্তির ঝুলি।

/আরএম

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close