দেশজুড়েপ্রধান শিরোনাম

সিলেটের এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করেছেন হাইকোর্ট। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনারকে এই অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে অনুসন্ধান শেষে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি অনুসন্ধানের সময় কমিটির সদস্যদের নিরাপত্তা ও তাদের সহযোগিতা করতে পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আদালত আগামী ১৮ অক্টোবর এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণের আদেশ দেন।

এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি করে মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ চৌধুরী।

এর আগে সিলেটের এম সি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্যবস্থা চেয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন। পরে আদালত এ বিষয়ে আইনজীবীকে আবেদন দাখিল করতে বলেন। পরে আইনজীবী গৃহবধূর ধর্ষণের ঘটনায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন জানান এবং এর শুনানি করেন।

অপরদিকে গণধর্ষণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এ কমিটি গঠন করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দু’জন।

এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় গত রবিবার সিলেট মহানগর হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেন।

চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারনামীয় পাঁচ আসামিসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র‌্যাব-৯। এদের মধ্যে ছয়জনের পাঁচদিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।

তারা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও পাঁচ নম্বর আসামি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল হাসান, এজাহারভুক্ত আসামি মাহবুবুর রহমান রনি, সন্দেহভাজন আসামি রাজন ও আইনুদ্দিন।

/এন এইচ

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close