দেশজুড়ে

নদীতে চামড়া ফেলে প্রতিবাদ; কাঁদলো মাদরাসা ছাত্ররা

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্কঃ কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় সিলেটের কওমি মাদরাসাগুলোতে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই চমড়া নদীতে ও রাস্তায় ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এমনও হয়েছে ১৬০০ টাকা ভাড়ায় ট্রাকে করে শত শত চামড়া শহরে এনে বিক্রি করতে হয়েছে মাত্র ১৪০০ টাকায়।

এ অবস্থায় কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীলরা বলছেন, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চমড়ার দাম অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দিয়েছেন। এটি কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, কোরবানির পশুর চমড়া বিক্রি করে অনেক কওমি মাদরাসার ছয় মাসের খরচ মেটানো হতো। এবার চমড়া সংগ্রহের সময় পরিবহনে যে ব্যয় হয়েছে মাদরাসাগুলোর সেই টাকাও ওঠেনি।

কোরবানির ঈদে পশুর চামড়ার পাইকার না পাওয়ায় বালাগঞ্জে কুশিয়ারা নদীতে চামড়া ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা। এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেটের আরও বেশ কয়েকটি উপজেলায়। চামড়া কেনার লোক না পাওয়ায় সারাদিন এবং রাতে পাহারা দিয়ে অপেক্ষার পর বাধ্য হয়েই মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পাঁচটি মাদরাসার প্রায় চার শতাধিক চামড়া কুশিয়ারা নদীতে ফেলে দেয়া হয়।

এছাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান বালাগঞ্জ ফিরোজাবাগ মাদরাসার ১১৯টি, বালাগঞ্জ মহিলা মাদরাসার প্রায় ১০০টি, তিলকচানপুর আদিত্যপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার ৩৪টি, নতুন সুনামপুর মাদরাসার ৭০টি ও দক্ষিণ গৌরীপুর মাদরাসার ২৭টি চামড়া নদীতে ফেলে দেয়া হয়। সবমিলে প্রায় কয়েক হাজার পশুর চামড়া নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এ সময় মাদরাসার ছাত্রদের কাঁদতে দেখা যায়।

ফিরোজাবাগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মালিক ও মহিলা মাদরাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুল বাতিন বলেন, ঈদের দিন সোমবার দুপুর থেকে পশুর চামড়াগুলো মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মাদরাসার রাস্তায় রাখা হয়। কেউই এসব চামড়া কিনতে আসেনি। চামড়ার দুর্গন্ধে বাসাবাড়ি থেকে বের হতে পারছিলেন না মানুষ। এজন্য এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি আমরা। চামড়া পুঁতে ফেলার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাই কুশিয়ারা নদীতে চামড়াগুলো ভাসিয়ে দিয়েছি আমরা।

তারা আরও বলেন, জানি না কেন গরিব ও এতিমদের হক নষ্ট করে চামড়ার সিন্ডিকেট করেছে তারা। যারা এমন কাজ করেছে কাল হাশরের মাঠে হিসাব দেয়া লাগবে তাদের। এতিমের হক নষ্ট করেছেন আপনারা। আল্লাহ আপনার অবশ্যই বিচার করবেন।

মাওলানা আব্দুল মালিক বলেন, চামড়ার দরপতনের পেছনে কওমি মাদরাসা ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল সাকিব বলেন, বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close