কৃষি

দেশে এক বছরে চা উৎপাদনের রেকর্ড

ঢাকা অর্থনীতি ডেস্ক: দেশের ১৬৮টি চা-বাগান থেকে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয় গত বছরের ২০২৩ সালে। যা বাংলাদেশে চা চাষের ১৭০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন। এর মধ্যে সিলেটেই রয়েছে ১৩৬টি চা-বাগান।

এর আগে দেশে চায়ের উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনি ছাড়া চা-বাগান থেকে। রেকর্ড ভঙ্গ করে চা উৎপাদনে সংশ্লিষ্টরা মহাখুশি। তারা মনে করেন এখন চা রপ্তানি জোরদার করা দরকার।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সব মিলিয়েই এই ইতিবাচক ফল পাওয়ার পেছনে রয়েছে সুষম আবহাওয়া, সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ, পুরোনো গাছ সরিয়ে নতুন চারা রোপণ।

উৎপাদনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান কামরান তানভীরুল রহমান বলেন, ‘উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদকরা যাতে চায়ের ভালো দাম পান সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’ তবে চা-বাগান মালিকরা মনে করেন, সিন্ডিকেটের কারণে তারা ইপ্সিত মূল্য পাচ্ছেন না।

বাজারে যদিও চায়ের কেজি ২০০-৩০০ টাকা। কিন্তু তারা সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকায় বিক্রি করেন। তারা বলেন, এই সিন্ডিকেট না ভাঙলে চা উৎপাদনের ভবিষ্যৎ আশঙ্কাজনক।

সূত্র জানায়, এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে কোনো কোনো বাগানমালিকদের অন্যরকম ‘সখ্য’ রয়েছে। তাই সিন্ডিকেট শক্তিশালী। অবশ্য এই বিষয়ে সরকারও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। যে সব বাগান লোকসান গুনবে সে সব বাগান ব্যাংক লোনসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধার বাইরে থাকবে।

অন্যদিকে চা-বোর্ড সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবারই প্রথম লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফলতা এসেছে। ২০২৩ সালে দেশের বাগানগুলো থেকে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। সেই হিসেবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো ৯ লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদন হয়েছে।

২০২১ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২২ সালে ১০ কোটি কেজি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদন হয় ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি।

বাংলাদেশ চা-বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, সবার সমন্বিত চেষ্টার ফলে এবার সব রেকর্ড ভঙ্গ করে সর্বোচ্চ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে বাগানমালিক, শ্রমিক, চা-বোর্ডের কর্মকর্তাদের জন্য।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয় উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, বাগানগুলোতে পুরোনো চা-গাছ সরিয়ে নতুন গাছ লাগানোয় নজর দেওয়া হয়েছে।

বাজারে অবৈধ পথে আসা চা যাতে ঢুকতে না পারে, বাগানমালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থও যাতে সুরক্ষিত হয়, সে সব দিকেও খেয়াল রাখা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সমতলে চা চাষে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। বিনামূল্যে চারা ও মেশিনারিজ বিতরণ করা হয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চল ও সমতলেও চা চাষের পরিমাণ বেড়েছে।

/এএস

Related Articles

Leave a Reply

Close
Close